আরএমপি পুলিশ কমিশনারের সাথে রাজশাহী মডেল প্রেসক্লাবের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
নিজস্ব প্রতিনিধি,উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: রাজশাহী মহানগরীর আইনশৃঙ্খলা নিরাপদ ও নির্বিঘ্নভাবে... বিস্তারিত→
মাজহারুল ইসলাম চপল :: রাজশাহীতে মাদক উদ্ধারের নামে নানা কারসাজি করছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের পরিদর্শক আশরাফুল হক ।
গত ১১ আগষ্ট ২০২০ মঙ্গলবার দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদকদ্রব্য উদ্ধারের উদ্দেশ্যে রাজশাহী নগরীর মতিহার থানার ধরমপুর পশ্চিমপাড়া (জাহাজঘাট) এলাকায় অভিযান দেয় রাজশাহী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের পরিদর্শক আশরাফুল ও তার টিম।
এরপর অভিযানের তীর বসে ৬০ বছরের বৃদ্ধা ভানুর বাড়িতে। তবে ভানু বৃদ্ধা হলেও তার তিন সন্তান মাদক ব্যাবসার সাথে জাড়িত রয়েছে বলে জানতে পারে আদবরের টিম। নিশানা সঠিক হলেও সময়ের হেরফেরের কারনে ধরতে পারেনি বৃদ্ধা ভানুর ছেলে হাবিব ও বকুলকে।
আসামী ধরতে ব্যার্থ হলেও হাবিবের বাড়ি তল্লাসী চালিয়ে উদ্ধার হয় ইয়াবা ট্যাবলেট ও গ্রাম হিরোইন। হাবিব ও বকুল পালিয়ে গেলে অমানষিক নির্যাতন সহ্য করতে হয় হাবিবের মা ভানুকে। উপস্থিত জনতার সম্মুখেই চুলের মুঠি ধরে চড় থাপ্পড় মারতে থাকে রাজশাহী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের পরিদর্শক আশরাফুলের লোকজন। এলাকার লোকজন জিজ্ঞাসা করলে সকলের সামনে বলে বসে ভানুর ঘর থেকে ৪০০-৪৫০ ইয়াবা ও হিরোইন পাওয়া গেছে। এই বলে ভানুকে অটক করে নিয়ে আসে রাজশাহী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের টিম।
সেখানে একজন মিডিয়াকর্মী জানতে চাইলে তার সাথেও খারাপ আচরন করে অদবরের পরিদর্শক আশারাফুল হক এবং পরে ঔ মিডিয়াকর্মীর পরিচয় জানতে পারলে তিনি বলেন আপনার জানার থাকলে আপনি অফিসে আসবেন। পরে জানা যায় মাদক ব্যাবসায়ী হাবিবের মা ভানুকে ৫০ পিছ ইয়াবার মামলা দেওয়া হয়েছে।
পরে এবিষয়টি মিডিয়ার নজরে আসলে অনুসন্ধানে নামে মিডিয়াকর্মীরা। বেরিয়ে আসে অনেক তথ্য। এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ভানুর ৪ সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে মারা গেছে অনেক আগেই। রয়েছে ৩ সন্তান, তবে তিন সন্তানই মাদকের সাথে জড়িত। এলাকাবাসি জানাই এই ভানু মানুষের বাসা বাড়িতে কাজ করে নিজের জীবিকা নির্বাহ করে। এলাকাবাসি আরও বলে ছেলের জন্য মাকে কেন ধরে নিয়ে যাবে ।
এই নিয়ে এলাকাবাসির মনে চাপা ক্ষোভ রয়েছে। এই নিয়ে গভীর অনুসন্ধানে কাজ করে মিডিয়াকর্মীরা। ভানুর পরিবারের সাথে কথা বলে জানা জানাযায় সেদিন ভানুর ছেলে হাবিবের ঘর থেকে মাত্র ২০-২৫ পিছ ইয়াবা উদ্ধার হয়। কিন্তু ঐ অভিযানের টিম পরিচালক পরিদর্শক আশরাফুল হক প্রকাশ করেন তার ঘর থেকে ৪০০ থেকে ৪৫০ পিছ ইয়াবা ট্যাবলেট ও প্রায় ৫০ গ্রাম হিরোইন পাওয়া গেছে। এখন জনমনে প্রশ্ন সত্যিই যদি হাবিবের ঘর থেকে ঐ পরিমান মাদক উদ্ধার হয় তাহলে ভানুর নামে মাত্র ৫০ পিছ ইয়াবার মামলা হলো কেন?
এই বিষয় নিয়ে অভিযান পরিচালনাকারি পরিদর্শক আশরাফুল হকের নিকট মুঠোফোনে ০১৭২১-৮৩৫২১৭ নাম্বারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনি জানলেন কি করে? পরে সাংবাদিক পরিচয় দিলে তিনি তার অফিসে চায়ের দাওয়াত দেন। যার ফোনের কল রেকর্ড রয়েছে।
এই ঘটনার পরে সুশীল সমাজের অনেক সচেতন নাগরিক বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ সরকার তথা দেশনেত্রী শেখ হাসিনার অক্লান্ত প্রচেষ্ঠা মাদকমুক্ত দেশ গড়ার। এই দেশ থেকে মাদকমুক্ত করার প্রত্যায় নিয়ে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিলেও সরকারের কিছু অসাধু কর্মকর্তার কারনে এই দেশ থেকে মাদকমুক্ত সম্ভব হচ্ছেনা। এই ধরনের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে শাস্তির ব্যাবস্থা করতে হবে অতি শিঘ্রই।
তবে এই বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের ডিডি আলী আসলামের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, আমি দীর্ঘদিন করোনায় আক্রান্ত ছিলাম। আমি মাঝে কয়েকদিন অফিসে ছিলাম না তাই আমার জানা নাই। অভিযান চলাকালে কোন মহিলাদের মারধরের নিয়ম আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোন ছেলে মানুষকে মারার নিয়ম নাই আর সে তো মহিলা মানুষ প্রশ্নই আসেনা। অভিযানের সময় বৃদ্ধা ভানুকে মারধর করা হয়েছে জানালে তিনি বলেন, আমি জানলাম অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবো।