সম্পাদকীয়
মফস্বল সাংবাদিকদের নিয়ে বানিজ্যে মসগুল ঢাকার নামধারী গুটিকয়েক পত্রিকা । অনেক ক্ষেত্রে নিয়োগপত্র এবং মাসিক বেতনের নিশ্চয়তা না থাকলেও খবর পাঠানোর চাপ ঠিকই থাকছে মফস্বল সাংবাদিকদের উপর। ফলে খবরের পেছনে যখন সাংবাদিক ছুটছেন তখন অনেক সময় নিজের নিরাপত্তার দিকে নজর দেবার সুযোগ থাকে না তাদের। পরিস্থিতি মোকাবেলার কোন প্রশিক্ষণও নেই তাদের। তারপরও মফস্বলের সাংবাদিকদের কাছে গুটিকয়েক পত্রিকার সম্পাদকবৃন্দর যেন আবদারের শেষ নেই।
আমের মৌসুম আসলে আম পাঠান, শীত আসলে খেজুরের রস পাঠান,অফিসে কোন অনুষ্ঠান হলে টাকা পাঠান ইত্যাদি। বিষয়টা অনেকটা এইরকম যেন মামার বাড়ীর আবদার। অথচ ঐ পত্রিকায় শ্রম দিচ্ছেন মফস্বল সাংবাদিক,বেতন তার পাওয়ার কথা,টিএ ডিএ তার পাওয়ার কথা কিন্তু পক্ষান্তরে চিত্রটা ভিন্ন। নুন আনতে পান্তা ফুরানো মফস্বল সাংবাদিকরা মনে করেন এই বুঝি পত্রিকাটা হাত ছাড়া হয়ে গেল কিংবা এই বুঝি আরেকজন সাংবাদিককে নিয়োগ দেয়া হবে হয়তো নতুন করে,তাই কর্তৃপক্ষ যা বলছে তাই করি। আর তখুনি হয় বিপদ কারন চাহিদার অতিরিক্ত যে কোন বিষয় আসলেই সেখানে অনৈতিকতা প্রবেশ করে বাসা বাধে।
আমার কাছের এক ছোট ভাই ২টি জাতীয় দৈনিকে কাজ করেন। তাকে মাসে ২টি পত্রিকায় ১০ হাজার টাকা করে পাঠাতে হয়। তাহলে প্রশ্ন ঐ সাংবাদিক নিজের পেট চালাবেন নাকি পত্রিকা চালাবেন ? উত্তরটা পাঠকদের উপরেই থাক।
আবার অনেক সময় অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরী করার জন্য অপ্রীতিকর কোন ঘটনা ঘটলে ঐ সকল পত্রিকার সম্পাদক বলেন- এই ধরনের সাংবাদিক আমার পত্রিকায় নেই,কার্ড জালিয়াতি করেছে তাকে মামলা দিন। হায়রে নাটক।
আবার দেখা যায় টাকার বিনিময়ে অনেক সময় মাদক ব্যবসায়ী কিংবা সন্ত্রাসীও মাঝে মাঝে পত্রিকার কার্ড দেখিয়ে বলেন – আমি সাংবাদিক । আবার অনেক সময় ৫ম শ্রেনী পাশ করা ব্যাক্তি পরিচয় দেন- আমিও সাংবাদিক। অথচ ঐ ব্যাক্তির নুন্যত্তম শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই সাংবাদিকতা করার কারন তিনি উচ্চ মাধ্যমিকও পাশ করেননি।
যাই হোক মফস্বল সাংবাদিকদের নিয়ে ঢাকার কিছু কিছু পত্রিকার সম্পাদক কিংবা প্রকাশক যে গেম খেলেন তা অচিরেই বন্ধ হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। আর সেই সাথে মফস্বল সাংবাদিকদের উচিত এই ধরনের পত্রিকা কিংবা পত্রিকার সম্পাদকদের বর্জন করা।
নির্বাহী সম্পাদক-উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন
সভাপতি-রাজশাহী মডেল প্রেসক্লাব