রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আন্দোলনের সংবাদ কভারের সময় সাংবাদিকের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। এ সময় শিক্ষার্থীরা সাংবাদিক ও ক্যামেরাপারসনকে ধাওয়া করেন এবং ক্যামেরা ভাঙচুরও করেন। রাবিতে শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয়দের হামলার ঘটনায় আজ রোববার প্রশাসন ভবনে তালা লাগিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভবনের সামনে প্যারিস রোডে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, স্থানীয়দের পক্ষ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন সাংবাদিক। ফলে আন্দোলনের সংবাদ কভারের সময় লাইভ চলাকালে চ্যানেল ২৪-এর রিপোর্টার আবরার শাঈর ও ক্যামেরাপার্সন লেলিনের ওপর হামলা করেন তাঁরা। এ ঘটনার ছবি তুলতে গেলে আজকের পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি রিপন চন্দ্র রায়ের ওপর চড়াও হন তাঁরা। এ সময় এগিয়ে এলে আরও কয়েকজন সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করেন তাঁরা। বলতে গেলে এ ঘটনায় ৫/৭ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। এর আগে সকাল ১০টা ২০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনে তালা লাগিয়ে আন্দোলন শুরু করেন তাঁরা। এরপর একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভবনের সামনে সমাবেশে রূপ নেয়।
ঘটনার এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে সেখানে উপস্থিত হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার। তখন শিক্ষার্থীরা তাঁর ওপর ক্ষিপ্ত হন এবং ‘ভুয়া’, ‘ভুয়া’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা বললে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে ঘটনাস্থল বিনোদপুর বাজারে যেতে বলেন। বিনোদপুরে যাওয়ার পথে প্রক্টরিয়াল বডি ও শিক্ষকেরা উপাচার্যকে সাবাস বাংলাদেশ মাঠে নিয়ে আসেন। এতে আবারও ক্ষিপ্ত হন শিক্ষার্থীরা। সেখানে তাঁরা রাবি উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন এবং কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেন। যা রাবির ইতিহাসে কলংকীয় অধ্যায়ের রচনা করা হয়েছে।
এদিকে রাবির সংঘর্ষের ঘটনায় ৫০০ জন্যে কে আসামি করে রাবি প্রশাসনের মামলা করেছে। এর মধ্যে ১ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন মাত্র। মোতায়েন করা হয়েছে ৭ প্লাটুন বিজিবি।শুধু তাই নয় বরং স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আজ রোববার সন্ধ্যায় এই কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত বিষয়টি উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনকে নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার। উপাচার্য বলেন, ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক হুমায়ুন কবীরকে আহবায়ক করে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সাবেক প্রক্টর ও রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক তারিকুল হাসান এবং সহকারী প্রক্টর আরিফুর রহমান। আগামীকাল অফিস সময়ে কমিটিকে নির্দেশনা দিয়ে চিঠি ইস্যু করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।